মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা:
সত্য প্রকাশে অপ্রতিরোধ্য দৈনিক সময়ের কণ্ঠ ডটকমে আপনাকে স্বাগতম  

সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করলে ৩৩৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় বাড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ জুন, ২০২১, ৬:০৯ অপরাহ্ন

২০২১-২২ অর্থবছরে জন্য তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর প্রস্তাব অনুসারে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করলে সরকার ৩৩৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতির সাথে তুলনা করলে এবারের বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের জন্য প্রস্তাবিত মূল্য চলতি অর্থবছরের তুলনায় ০.৭ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধাপক এবং বিএনটিটিপির আহবায়ক ড. রুমানা হক। তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ শনিবার ১২ জুন ২০২১ বেলা সাড়ে ১১টায় অনলাইন মিটিং সফটওয়ার ‘জুম’ এ ‘তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর এবং জনস্বাস্থ্যে এর প্রভাব’ বিষয়ক ভার্চুয়াল বাজেট সংলাপে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে তিনি একথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর), বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) ও টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) সম্মিলিতভাবে এ বাজেট সংলাপের আয়োজন করে।

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও নাটাবের চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সিরাজগঞ্জ-২ সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত; ফেনি-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার এবং গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক ও নীতি বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. রুমানা হক আরো বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে সিগারেট খাত থেকে সরকারের সম্ভাব্য রাজস্ব আয় ২৭১৮০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য তামাক বিরোধী সংগঠনের দেয়া প্রস্তাব অনুসারে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করলে এর পরিমাণ বেড়ে দাড়াবে ৩০৫২০ কোটি টাকায়। বিপরীতে সরকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছে তাতে আয় হবে ২৭,৯৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট করের প্রস্তাব গ্রহণ না করায় সরকার ৩৩৪০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। আমরা সবসময় তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছি অথচ নি¤œ ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের মূল্য অপরিবর্তিত রাখায় এবং উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের মূল্য অতি সামান্য বাড়ানোয় মূল্যস্ফীতিন বিচারে সিগারেটের গড় মূল্য ০.৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রস্তাব মেনে নিলে এই মূল্য ২০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেতো।

তিনি আরো বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের হিসাব অনুসারে সিগারেট বিক্রির আনুমানিক পরিমাণ ৬৪০০ কোটি শলাকা। তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রস্তাব তা বাস্তবায়ন করলে এই সংখ্যা কমে ৫৪০০ কোটি শলাকা হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে ৯ লক্ষ ৭৪ হাজার মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। চলতি বছর তামাক কোম্পানির লাভ আনুমানিক ৫০৪০ কোটি টাকা। আমাদের প্রস্তাব মানলে কোম্পনীর লাভ কমে ৪৩৫০ কোটি টাকা হবে। প্রাণঘাতি প্রণ্যের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে অবিশ্যাস্য গতিতে বাড়তে থাকা কোম্পানীর মুনাফা কমিয়ে আনা আবস্যক। তিনি প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতির প্রবর্তন, তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর প্রস্তাব পরিবর্তন করে তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রস্তাব অনুসারে করারোপ; এবং অতি দ্রæত একটি কমপ্রিহেনসিভ তামাক কর পলিসি গ্রহণের সুপারিশ করেন।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনাকালে আলোচকরা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক বিরোধী সংগঠন, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের কোনো সুপারিশ না মেনে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য কাক্সিক্ষত হারে বাড়ানো হয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এভাবে চলতে থাকলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সেটা ২০৫০ সালেও বাস্তবায়ন হবে না। কারণ প্রস্তাবিত বাজেটে সব সিদ্ধান্ত তামাক কোম্পানির পক্ষে যাবে।২০৪০ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে তামাক বিরোধীদের প্রস্তাব অনুসারে করারোপ করা জরুরি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ.....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর