ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাটি ভরাট করার কারণে ত্রিশাল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড ও বটতলাসহ এলাকার দুই পাশে জমছে বালুর স্তুপ। কোনো যানবাহন এলে বাতাসে বালু ও ধুলা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। ধুলাবালি উড়ে গিয়ে পড়ে আশপাশের দোকানে।
হাত দিয়ে নাক-মুখ চেপে চলাচল করতে হয় পথচারী ও স্থানীয় লোকজনের।এ চিত্র নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসাবাড়ি ছাত্র মেছ ও ছাত্রী মেছসহ সড়ক দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারছেনা।দেশব্যাপি এই মহামারী করোনা ভাইরাস ও পবিত্র রমজান মাস তার ওপর আবার সম্প্রতি নতুন করে যোগ হয়েছে ধুলাবালির যন্ত্রণা।স্থানীয়রা জানান, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র পড়ে আছে মাটি ও বালু। যান বাহন চলাচলের সময় জমে থাকা এসব বালু ও মাটি বাতাসে ওড়ে। কিন্তু এসব ধুলাবালি কমাতে কোনো ব্যবস্থা নেয় না কর্তৃপক্ষ। দু-এক দিন হঠাৎ পানি ছিটিয়ে দেয়, তা–ও নামমাত্র। এ কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমছে না।
আজ সকালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সহ আশপাস এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পড়ে আছে ছোট ছোট ইটের খোয়া, বালু ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী। চলাচল করছে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন। যানগুলো চলার সময় ধুলা ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো এলাকা। একসঙ্গে একাধিক যান চলাচল করলে সেখানে থাকা দায় হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের।
১নং ও ৩নংওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা পর্যন্ত এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলাচল করলেই ধুলায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে চারপাশ। আশপাশের দোকান, মার্কেটসহ অন্য স্থাপনাগুলোর লোকজনও টিকতে পারছে না ধুলার যন্ত্রণায়।এব্যাপারে ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা খাদেমুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ধুলার কারণে কোনো কাপড় এক দিনের বেশি পরা যায় না। অফিস থেকে বাসায় ফিরে প্রতিদিনই কাপড় ধুতে হয়।
ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি শামসুল হুদা ধুলা নিয়ে কথা উঠতেই তিনি বলেন, আমি ২৪টা ঘণ্টা ধুলায় থাকি কারণ আমার ঔষধের দোকান সবসময় রোগীর আসা যাওয়া থাকে। মাঝেমধ্যে নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। গলা ব্যথা করে, বুক জ্বলে।
অনেক মানুষ ধুলায় অসুস্থ হচ্ছে ঠান্ডা জনিত রোগে।ধুলা থেকে বাঁচতে অনেক দোকানি তাঁদের দোকানের সামনে আলাদা করে একধরনের পর্দা লাগিয়েছেন। স্থানীয় ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর উসমান গনি কুসুম জানান, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন করে মাটি ভরাটের উন্নয়ন কাজ করছেন তার জন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। এখন সরকারি ভাবেই সারা বাংলাদেশে লকডাউন চলছে। পবিত্র রমজান মাস সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতার সেহেরি নিয়ে ব্যস্ত থাকে কিন্তু ধুলাবালির কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। আমার কাছে অভিযোগ করেছে। বাসাবাড়ি দোকান পাট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সাধারণ মানুষের চলাফেরা খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি এবং ৩নংওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল আলম শাহিনকে নিয়ে ঠিকাদার এবং কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যাল প্রশাসনকে অবহিত করি এবং আমাদেরকে বলছে প্রতিদিন সকাল-বিকেল পানি দিবে।কিন্তু এখন তারা সেকথা রাখছে না। আমি প্রশাসনের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করছি।