সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে
ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা চালু করার দাবিতে আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন
মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ
সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো
হয়েছে।
নোটিশে এই চারজন ছাড়াও বিএনপি মহাসচিব, জাতীয়
পার্টির মহাসচিব, গণফোরামের ড. কামাল হোসেন,
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক
ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে বিবাদী
করা হয়েছে।
রোববার নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের
আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। তিনি নিজেই
সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের
সভাপতি অশোক কুমার সাহার পক্ষে পাঠানো লিগ্যাল
নোটিশটি পাওয়ার দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে
ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা শুরু করতে হবে। অন্যথায়
বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক জনগণের পক্ষে
হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের পর পশ্চিম
পাকিস্তানিদের শোষণ, নির্যাতন এবং বেআইনি
কার্যকলাপের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের
স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও
খৃস্টানসহ অন্যান্য নাগরিকরা এক রক্তক্ষয়ী
যুদ্ধের মাধ্যমে ভারত-রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের
সার্বিক সহযোগিতায় স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
আমাদের ১৯৭২ সালের পবিত্র সংবিধানে
স্বাধীনতার চেতনাসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতি ছিল
জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও
ধর্মনিরপেক্ষতা।
‘স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানের
মূলনীতিসমূহ পরিবর্তন করা হয়। যা স্বাধীন
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু
জনগণ মনেপ্রাণে গ্রহণ করেনি। সংবিধানে ২ক
অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনের ফলে
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে
পরিণত হয়েছে।’
‘বর্তমানে ভারত সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য
হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে
সাংবিধানিকভাবে হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
সুতরাং বিশ্ববাসীকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য
বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিগণিত
করা আবশ্যক। সেজন্য পবিত্র সংবিধানে অর্থাৎ
মূলনীতি ৮ম আর্টিকেলে ধর্ম নিরপেক্ষতা
থাকবে। কিন্তু কোনোক্রমেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম
থাকবে না।’
নোটিশে আরও বলা হয়, জাতীয় সংসদে বিষয়টি
বিল আকারে উত্থাপনসহ বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য
দ্বারা পাস করাও আবশ্যক। অন্যথায় বাংলাদেশ চিরতরে
সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বিশ্ববাসীর নিকট
স্বীকৃতি পাবে। তাছাড়া জাতির পিতা ও বাংলাদেশের
স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বহমানের স্বপ্ন
বাস্তবায়িত হবে না।’