শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা:
সত্য প্রকাশে অপ্রতিরোধ্য দৈনিক সময়ের কণ্ঠ ডটকমে আপনাকে স্বাগতম  

‘আমাদের পেটে লাথি মারবেন না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট টাইম : সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

‘আমরা হকার। সারাদিন রাস্তায় থাকি। বাসা পর্যন্ত গিয়া মানুষের দরকারি জিনিস দিয়া আসি। অথচ ঢাকা শহরের মানুষ হকার দেখতে পারে না। আমাদের কথা না ভাইবা, না শুইনা আইন কানুন করে। আমাদের পেটে লাথি পড়ে। তামাশার আইন চাই না যা আমাদের রাস্তায় নামায়। আমাদের পেটে লাথি মারবেন না।’

সম্প্রতি রাজধানীতে ‘সংশোধিত প্রস্তাবিত খসড়া ধূমপান ও তামাক দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন: হকারদের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন রেনু বেগম। বেসরকারি সংস্থা জনঅধিকার ফাউন্ডেশন ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন হকার নিজেদের মত প্রকাশ করেন।

রেনু বেগম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ফেরি করে চকলেট, চা, সিগারেট বিক্রি করেন। তাঁর আয়েই চলে তাঁর সংসার।

রেনু বেগমের মত বেশ কয়েকজন হকার জড়ো হয়েছিলেন রাজধানীর তোপখানা রোডে। চোখে মুখে উদ্বেগ। এমনিতেই বিভিন্ন বাধা নিষেধে ব্যবসা করতে পারেন না হকাররা। তার ওপর লাইসেন্সসহ বিভিন্ন বিধি নিষেধের খড়্গ চাপিয়ে দিলে কোথায় যাবেন তাঁরা- এটাই ছিল তাঁদের প্রশ্ন।

রেনু বেগম বলেন, ‘হকারি কইরা ট্যাকা কামাই করি। আমার ট্যাকায় চলে সংসার। আমি অশিক্ষিত মানুষ। আমারে যদি লাইসেন্স নিতে কয়, যামু কই। এমনিতেই রাস্তায় চান্দা দিতে দিতে কিছুই থাকে না।’

সম্প্রতি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এ আবারো সংশোধন আনার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খসড়ায় বলা হয়েছে ফেরি করে তামাক ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি করা যাবে না। তামাক ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি করার জন্য নিতে হবে লাইসেন্স।

হকারদের কথা, মাত্র কয়েক হাজার টাকা পুঁজি করে ব্যবসা করা হকাররা কীভাবে লাইসেন্স নিবে। আর আইন অমান্য করলে পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ছিন্নমূল হকার্স সমিতির সহসভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এত টাকার জরিমানার বিধান রাখা মানে হকারকে নিঃস্ব করে ফেলা।’

হারুন অর রশিদ আরো বলেন, ‘আমরা কোন অবৈধ জিনিস বিক্রি করি না। তাও আমাদের অনেক কষ্ট। এ ধরণের আইন হলে এসব পণ্য লুকিয়ে লুকিয়ে বিক্রি হবে। তখন বাড়বে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর হয়রানি। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এসব আইন চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি ও হকার্স সংগ্রাম পরিষদের নেতা আবুল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সানিয়াত, দৈনিক উন্নয়ন বার্তার সম্পাদক শেখ মঞ্জুর বারী মঞ্জু, বাংলাদেশ ভ্রাম্যমাণ হকার্স পরিষদের সহসভাপতি কবির রেজা, জাতীয় হকার্স ফেডারেশনের আরিফ চৌধুরী প্রমুখ।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ.....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর