যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকায় নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আমরা ভূমিহীন- গৃহহীন মানুষের ঘর দিচ্ছি। ১৯৯৭ সালে নৌবাহিনীর হাত দিয়ে সেন্টমার্টিনে প্রথম ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘর দেওয়া হয়।
রোববার (৩০ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে এমপিএ ২টি সংযোজন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমুদ্রসীমায় নজরদারি বাড়াতে আমরা উপকূলে ঘাঁটি তৈরি করেছি। শেরেবাংলা ঘাঁটি নির্মাণ কাজ অব্যাহত আছে। এটি নির্মাণ শেষ হলে সমুদ্র উপকূলের নিরাপত্তা আরও বাড়বে।’ তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের জাহাজ নিজেদের তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নদীমাতৃক দেশে জাহাজ তৈরির ফলে অনেক বেসরকারি খাত এগিয়ে আসছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘খুলনা শিপ ইয়ার্ড ও চট্টগ্রাম ডাক ইয়ার্ড নৌবাহিনীর অনেক সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমাদের নৌবাহিনীর নিশ্চয়তা বিধান করছে, যা প্রশংসার দাবিদার।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সমুদ্রসীমা রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে। যুদ্ধ ও করোনার মধ্যে আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। কিছুটা অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেওয়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা কীভাবে এটা থেকে মুক্ত থাকতে পারি, সেদিকে নজর রাখতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
এর আগে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো ২টি এমপিএ নেভাল এভিয়েশনে সংযোজন করেন। এর মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীর নেভাল এভিয়েশন এমপিএ স্কোয়াড্রনে মোট ৪টি মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করলো।
আধুনিক সেন্সর ও মিশন ইকুইপমেন্ট সংবলিত নতুন ২টি ডর্নিয়ার ২২৮ এনজি মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২৩ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। নব সংযোজিত এমপিএ ২টি প্রায় ৫ ঘণ্টা একনাগাড়ে উড্ডয়ণের মাধ্যমে আমাদের সম্পূর্ণ এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন সহজেই নজরদারি করতে পারবে। নতুন এমপিএ ২টিতে গভীর সমুদ্রে নজরদারী পরিচালনার জন্য যুক্ত রয়েছে সার্ভেইল্যান্স রাডার, ইলেক্ট্রা অপটিক ইনফ্রারেড ক্যামেরা, ট্যাকটিক্যাল ডেটা লিঙ্ক ও সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ডিটেকশন ফাইন্ডার।
এছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত মিশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং জাহাজ ও সাবমেরিনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে এমপিএ দুইটিতে। এই এমপিএসমূহ কমান্ড প্লাটফর্ম হিসেবে দেশের সমুদ্রসীমার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, সুনীল অর্থনীতির সুরক্ষায় যে কোন ধরণের অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।