ঈদের আগে ও পরে সাত দিন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। এজন্য আগেভাগেই ঢাকা ছাড়ছেন মোটরসাইকেল চালকরা। অনেকেই বাস-ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি, কেউ বাড়তি খরচ থেকে বাঁচতে, আবার কেউ ছুটিতে ঢাকায় মোটরসাইকেল রেখে যাওয়া নিরাপদ মনে করছেন না—এমন ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা হচ্ছেন গন্তব্যে। গতকাল বুধবার ঢাকার অন্যতম প্রবেশ ও প্রস্থানের পথ গাবতলী ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন শহীদুল বারী। গ্রামের বাড়ি বগুড়া। শহীদুলের সঙ্গে আছেন স্ত্রী কণা ও সাত বছরের সন্তান অনিক। সঙ্গে কিছু মালামাল। শহীদুল বলেন, ‘যে বেতন-বোনাস পেয়েছি, তা দিয়ে বাস বা ট্রেনে যাওয়া সম্ভব নয়। যাতায়াতে ৬ হাজার টাকা ফুরিয়ে যাবে। তাই বসকে বলে আগেই মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) গেলে রাস্তায় মোটরসাইকেল ধরবে।’
অনেকে টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে একজন রাজশাহীর সৌরভ। তিনি বলেন, ‘ট্রেনের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাইনি। বাসের থেকে মোটরসাইকেল জার্নি অনেক ভালো। আমার মনে হয়, বাস-মালিকদের খপ্পরে পড়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।’
শখের দামি মোটরসাইকেল গ্যারেজে চুরি হয়ে যেতে পারে—এ আশঙ্কায় অনেকে মোটরসাইকেল নিয়েই বাড়ি ছুটছেন। তাদের মধ্যে একজন যশোরের সৌমিক। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। সৌমিক হক বলেন, ‘ইয়ামাহা আর১৫ মোটরসাইকেল সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। গ্যারেজে রাখলে চুরি হবে না—এ নিশ্চয়তা কে দেবে?’
সকালে কমলাপুর স্টেশন থেকে রাজশাহীর ধূমকেতু এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামের সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ও মহানগর প্রভাতী, দিনাজপুরের নীলসাগর, রংপুরের তিস্তা এক্সপ্রেস, খুলনার সুন্দরবন এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। এছাড়া মহুয়া কমিউটার ও কর্ণফুলী কমিউটারও ঠিক সময়ে ছেড়েছে।
শহীদ উল্লাহ নামের চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রী বলেন, ‘দুই দিন লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্ট করে টিকিট পেয়েছিলাম। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছি। আশা করছি, নিরাপদে বাড়ি যেতে ও ফিরে আসতে পারব।