শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা:
সত্য প্রকাশে অপ্রতিরোধ্য দৈনিক সময়ের কণ্ঠ ডটকমে আপনাকে স্বাগতম  

সাংবাদিকের ওপর ছাত্রলীগের হামলার দুবছরেও হয়নি তদন্ত

লাবু হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন

রাবি প্রতিনিধি
সাংবাদিক আলী ইউনুস হৃদয়ের ওপর ছাত্রলীগ নেতার হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগের দুই বছরেও তদন্ত করেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। প্রশাসন বলছে, দুই বছর আগের ঘটনার কথা এখন মনে নেই। ঘটনাটিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সাংবাদিকদের সমঝোতা হয়েছিলো।

এর আগে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক খোলা কাগজের রাবি প্রতিনিধি আলী ইউনুস হৃদয়ের ওপর ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর হামলা চালায় রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুল জামিল সুষ্ময়।

পরের দিন রোববার দুপুরে ছাত্রলীগের ওই নেতার বহিস্কারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী। এছাড়াও অভিযোগ পত্রের অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও জনসংযোগ দপ্তর বরাবর দেন তিনি। সেসময় অভিযোগ পত্র হাতে পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দুবছরেও হয়নি তদন্ত।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি জানি ব্যাপারটা নিয়ে ছাত্রলীগ ও সাংবাদিকদের মধ্যে সমঝোতা করে নিয়েছে। কিভাবে করেছে সেটা জানি না। তাছাড়া দুই বছর আগের ঘটনা এখন মনে নেই।’

তবে ঘটনায় সাংবাদিকদের সাথে ছাত্রলীগের কখনও সমঝোতা হয়নি বলে জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আরাফাত রহমান। তিনি বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের সাথে সাংবাদিকদের কখনও সমঝোতা হয়নি, সেটা একটা বোঝাপড়ার মধ্যে ছিল। সে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভিন্ন।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আলী ইউনুস হৃদয় বলেন, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয়। তবে সাংবাদিক আরাফাত রহমানের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনাটি আমাদের সামনে মুখ্য। ক্যাম্পাসে একজন শিক্ষার্থী অন্য একজন শিক্ষার্থীকে আঘাত করলে প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা প্রতিবারই মারধরের ঘটনায় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয় নি। আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে।

দ্রুত তদন্ত শেষ করার দাবি জানিয়ে আরাফাত বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি সেটার তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু প্রশাসন শুধু এ ঘটনাতেই নয় সাংবাদিক নির্যাতন সংক্রান্ত সকল অভিযোগের ক্ষেত্রেই নিশ্চুপ ভুমিকায় ছিল। এ ঘটনাগুলোর মাধ্যমে প্রশাসনের বেখেয়ালি মনোভাব প্রতীয়মান হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম বলেন, সাংবদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় সময় হামলা মামলার স্বীকার হয়। এসব বিষয় উপেক্ষা করেই তাদের পথচলা। পরিতাপের বিষয় অামাদের দেশের সংস্কৃতি বিচারহীনতার সংস্কৃতি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক উপর হামলা চালায় নামধারী একজন ছাত্রলীগের নেতা। কিন্তু তার অাদৌতে কোন বিচার হয় না। এ সংস্কৃতি অামাদের জন্য লজ্জার।

রাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি সালমান শাকিল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তরগুলো থেকে অভিযোগের কপি হারানোর ঘটনা নতুন নয়। মূল ঘটনা হলো শিক্ষার্থী, সাংবাদিক কারও অভিযোগ আমলে নিতে চায় না প্রশাসন। প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে এই হামলাগুলো প্রশাসনের মদদেই হয় কিনা। সেজন্য তদন্ত করতেও উদ্যোগী হন না তারা। দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম শেষ করার দাবি করছি।#


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ.....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর